0
Your Cart

হালকা ওজনের স্বাচ্ছন্দ্যের শাড়ি

বাঙালী নারী মানেই শাড়ির প্রতি আছে আলাদা ভালোবাসা । তাই অনুষ্ঠান হোক অথবা বিকেলে একটু আড্ডা-অনেকেই বেছে নেন নানান ধরনের শাড়ি। বর্তমানে বাংলাদেশের আবহাওয়া অত্যন্ত গরম তাই ভারী শাড়ি পরে বাইরে যাওয়া যেমন কষ্টের তেমনই অনেক্ষন পরে থাকাটাও সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে হালকা ওজনের শাড়ি হলে চলাফেরায় যেমন স্বাচ্ছন্দ্য আসে, তেমনই শাড়ি পরাটাও বেশ উপভোগ করা যায়। আজকে আমরা কিছু হালকা ওজনের শাড়ির রকমফের জানবো, যেগুলো আমরা এই গরমে পরার জন্য সহজেই বেছে নিতে পারিঃ

মসলিন শাড়িঃ

মসলিন শাড়ি

কথিত আছে , একটি আস্ত মসলিন শাড়িকে ভাঁজ করে একটি ম্যাচের বাক্সে পুরে রাখা যেত। ১৭০ বছর পর সেই ঢাকাই মসলিন শাড়ি বাংলাদেশে আবারও উৎপন্ন শুরু হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের শাড়ির বাজারে আবারও মসলিন শাড়ি সহজলভ্য হয়েছে। দারুন সব ডিজাইন, হাতে আঁকা অথবা হাতের তাঁতে বুনানো এই ঐতিহ্যবাহী শাড়ি যেকোন অনুষ্ঠানের জন্যই মানানসই। মসলিন শাড়ি খুবই হালকা ওজনের হয় বলে দিনভর পরলেও অস্বস্তিবোধ হয় না। তাছাড়া মসলিন আগাগোডাই আভিজাত্যের প্রতীক। তাই আপনি যদি একজন শাড়ি প্রেমিক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার সংগ্রহে এই দারুন শাড়ি্টি রাখতেই পারেন।

জামদানী শাড়িঃ

জামদানি শাড়ি

বাংলাদেশের এক অনন্য ঐতিহ্যবাহী শাড়ী জামদানী। ঢাকাই জামদানী হিসেবে পরিচিত এই শাড়িটির জন্ম অনেক বছর আগে আমাদেরই এই অঞ্চলে। মূলত জ্যামিতিকভাবে নানারকম নকশা, ফুল, পাতা এমন কি লৌকিক কল্পকথাও হাতের বুননে এই শাড়ির জমিনে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলেন তাঁতীরা।  হালকা ওজনের আরামের এই শাড়িগুলো আমাদের দেশের বাইরে বিদেশেও সমান সমাদৃত হয়ে থাকে। সাধারনত সুতার কাউন্টের (সুতাটি কত চিকন সেটি কাউন্টের মাধ্যমে বোঝানো হয়) উপর এর মান নির্ভর করে থাকে। বর্তমানে আমাদের দেশে হাফ সিল্ক, সুতি এবং পিউর সিল্কের জামদানী পাওয়া যায়। ধরনভেদে ৭০০ টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকারও জামদানী রয়েছে। তাই যেকোন সময়, যেকোন অনুষ্ঠানে পরে ফেলতে পারেন একটি জামদানী শাড়ি, যা একটি অভিজাত লুক এর পাশাপাশি দেশীয় ঐতিহ্য তুলে ধরবে সাবলীলভাবে।

 

সিল্ক শাড়িঃ

সিল্ক শাড়ি

আভিজাত্যের প্রতীক সিল্ক শাড়ি বললেই সবার প্রথমে আমাদের মনে আসে রাজশাহী সিল্ক শাড়ি।  মূলত রেশম পোকা থেকে উৎপন্ন সুতা যা রেশমী সুতা বা সিল্ক হিসেবে পরিচিত- এ থেকে বোনা সিল্ক শাড়ি সারা বিশ্বে আদিকাল থেকে সমাদৃত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাজশাহী সিল্ক মূলত উন্নতমানের মালবেরি সিল্ক। সিল্ক শাড়ির একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো এটি খুবই হালকা, পরতে অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যময়, এছাড়া দীর্ঘসময় পরে থাকার জন্য আরামদায়ক। । এছাড়া সিল্ক শাড়িগুলো একটু চকচকে ,রঙিন হয়ে থাকে। বর্তমানে  রাজশাহী সিল্কের উপর হাতের কাজ, হ্যান্ডপেইন্ট, ব্লক বাটিক, স্ক্রিনপ্রিন্ট ইত্যাদি নানাভাবে কাজ করা হচ্ছে। আরো নানারকম সিল্ক এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, এর মাঝে জনপ্রিয় একটি সিল্ক হলো কাঞ্চিপুরাম সিল্ক। ভারতের তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরাম এলাকায় উৎপন্ন হওয়া বিশেষ এ শাড়িগুলো হালকা ওজনের সাথে সাথে বেশ রঙিনও। শাড়িগুলো নানারকম ঐতিহ্যবাহী মোটিফ ও নকশা দ্বারা বানানো হয়ে থাকে তাই এগুলো যেমন ক্ল্যাসি লুক আনে তেমনই যেকোন জাঁকজমক অনুষ্ঠানে এমন কি বি্যের কনেকেও মানিয়ে যায় সহজেই। এছাড়াও জর্জেট সিল্ক,, শিফন সিল্ক, অরগাঞ্জা সিল্ক, তসর বা কোসা সিল্ক শাড়িগুলোও বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। শাড়ির ভাঁজ সহজে নষ্ট হয় না বলে যে কেউ এগুলোকে সহজেই সামলাতে পারে তাই সিল্ক শাড়ির চাহিদা সবসময়ই বেশি।

শাড়ি মানেই সবস্ময় ভারিক্কি কিছু হতে হবে- তা নয়। বরং রোজকার দিনে পরার মত হালকা সুতি শাড়ি যেমন আছে, তেমন আছে আভিজাত্য প্রকাশ করার মতো হাল্কা ওজনের এসব শাড়িগুলোও। তাই দিনভর অনুষ্ঠান হোক বা বন্ধুদের আড্ডা, চাইলেই চট করে পরে ফেলতে পারেন একটি শাড়ি।

ছবি সংগ্রহ: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *